১। তিস্তাঃ তিস্তা রংপুর অঞ্চলের প্রধান নদী। এটি ব্রহ্মপুত্রের একটি উপনদী। ভারতের উত্তর সিকিমের পার্বত্য এলাকায় এর উৎপত্তি। পার্বত্য এলাকায় এর প্রবাহ সৃষ্টি করেছে অপরুপ দৃশ্যের। লাচেন এবং লাচুং নামের দু’পর্বত স্রোতধারাই তিস্তার উৎস। এ দু’স্রোত ধারা সিকিমের চুংথাং-এ এসে মিলেছে। চুংথাংক এর ভাটিতে তিস্তা আস্তে আস্তে প্রশস্থ হতে থাকে। সিংতামে এর প্রশস্ততা ৪৩ কিলোমিটার। জলপাইগুড়ি জেলার মোট ৫৬ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে তিস্তা নীলফামারী জেলার ডিমলা থানার ছাতনাই গ্রামের প্রায় ১ কিলোমিটার উত্তর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বাংলাদেশে ১শ ১২ কিলোমিটার পথ প্রবাহিত হয়ে তিস্তা চিলমারীর দক্ষিনে গাইবান্ধা জেলার কামারজনি মৌজায় ব্রহ্মপুত্র নদে মিলিত হয়। এ নদী বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের অধিকাংশ জেলা অর্থাৎ নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার উপর দিয়ে প্রভাবিত হয়। ১৭৮৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যমত তিস্তা ছিল উত্তরবঙ্গের প্রধান নদী। তিস্তা নদীর দুটি ব্যারেজ একটি ভারতের গজলডোবায়, অন্যটি বাংলাদেশের দোয়া নীড়ে। বুড়ি তিস্তা, ঘাঘট, মানাস, ধাইজান ইত্যাদি তিস্তার শাখা নদী ছিলো কিমতু ধীরে ধীরে উৎস নদী থেকে এগুলো পৃথক হয়ে গেছে।
২। ঘাঘটঃ তিস্তার একটি শাখা নদী। ঘাঘট পূর্বে খুব গুরুত্বপূর্ন নদী ছিল এবং শহরটি এর তীরেই অবস্থিত। নীলফামারী জেলা কিশোরগঞ্জ থানার কুজিপাড়া গ্রামে উৎপত্তি। আকাবাকা নদী। উৎপত্তি স্থল থেকে গংগাচড়া থানার পশ্চিম সীমানা দিয়ে রংপুর সদর থানা অতিক্রম করে পীরগাছা থানায় প্রবেশ করেছে। এরপর আলাইকুড়ি নদীকে সাথে নিয়ে গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুর হয়ে যমুনা নদীতে মিলিত হয়েছে। গাইবন্ধা শহরের ৮ কিলোমিটার পূর্বে মানাস নদী ঘাঘটের সাথে যুক্ত হয়েছে। ঘাঘট ধীরগতির নদী হিসেবে পরিচিত। পূর্বে এ নদী তিস্তার উপনদী ছিল। উনবিংশ শতাব্দীতে নদীর মোহনা ভরাট হওয়ায় তিস্তা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ধীওে ধীওে সংকীর্ন হয়ে এটি এখন শহরের গুরুত্বপূর্ন ড্রেণণের মত হয়ে পড়েছে। ঘাঘটের প্রধান স্রোত দক্ষিণ দিকে মানাসের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে এবং দক্ষিণ দিকে আলাই নদীর শাখা দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এর অন্য চ্যানেলটি পূর্বদিকে যমুনার সাতে মিলেছে। জুলাই-আগষ্ট মাসে পানির সর্বোচ্চ প্রবাহ থাকে। মার্চ-এপ্রিলে ক্ষীণধারায় বয়ে চলে এ নদীটি।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS